আবিদ হাসান, হরিরামপুর মানিকগঞ্জ থেকে: সপ্তাহের ব্যবধানে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৬০-৭০ টাকা কমে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হলে স্বস্তি ফিরেছে ভোক্তাদের মাঝে। পেঁয়াজের দাম কমে ক্রেতাদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি আসলেও ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ চুরির আতঙ্কে কৃষকরা।
হরিরামপুর উপজেলার স্থানীয় বেশ কয়েকজন কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার বাল্লা, চালা, গালা, গোপীনাথপুর, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে আগাম জাতের পেঁয়াজের ফলন ভাল হয়েছে । ১৫-৩০দিনের মধ্যে পেঁয়াজ তোলার উপযোগী হয়ে উঠবে। বর্তমানে পেঁয়াজের দাম ভাল হওয়ায় উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি পেঁয়াজ ক্ষেত থেকে চুরি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এমনকি চুরি ঠেকাতে রাত জেগে পেঁয়াজ ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন কয়েকজন কৃষক। ক্ষেতের পাশে ছোট ছোট অস্থায়ী টং ঘরের মতো ঝুপড়ি ঘর তুলে সকালের সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত পেঁয়াজ ক্ষেতের ঝুপড়িতেই রাত কাটান কৃষকেরা। আবার কেউ কেউ অপরিপক্ক পেঁয়াজ তুলছেন ক্ষেত থেকে।
বাহিরচর এলাকার কৃষক লাল খান এর ছেলে আব্দুল মালেক জানান, ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছি। পেয়াজ আবাদে এবার খরচ বেশি। তবে দাম ভাল থাকায় লাভবান হতাম। এদিকে ৫ বিঘা জমির মধ্যে ২-৩ শতাংশ জমির পেঁয়াজ চুরি হয়ে গেছে। তোলার উপযোগী না হলেও চুরির ভয়ে অপরিপক্ক অবস্থায় পেঁয়াজ তুলছি।
বাহিরচর গ্রামের কৃষক মঙ্গল জানান, কয়েকদিন আগে তার ক্ষেতের পাশের জমি থেকে এক কৃষকের অনেক পেঁয়াজ চুরি হওয়ায় এরপর থেকেই তিনি রাত জেগে ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন। এখন পেঁয়াজের আকার বড় হলেও তোলার উপযোগী হয়নি। চোরের ভয়ে এখনই পেঁয়াজ তোলা হচ্ছে । সঠিক সময়ে তুলতে পারলে ৪২ শতাংশ জমিতে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ মন পেয়াজ হতো কিন্তু চুরির ভয়ে আগে ওঠানোর কারনে ৩৫ থেকে ৪০ মন পেঁয়াজ হবে।
একই এলাকার কৃষক মো. হারুনুর রশিদ জানান, কয়েকটি ক্ষেত মিলিয়ে ৪০ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তবে ৪ শতাংশ একটি আবাদি জমিতে ১ শতাংশ পেঁয়াজ চুরি হয়েছে।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন জানান, ওয়ার্ড সদস্য বিষয়টি জানিয়েছেন। পাহারা চলমান রয়েছে। পরে আর চুরি হয়নি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, এ অঞ্চলের জমি পেঁয়াজ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। উপজেলায় বাল্লা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এ বছর উপজেলায় ৮৫০ হেক্টর জমিতে কন্দ পেঁয়াজ চাষ হয়েছে।
এ বিষয়ে হরিরামপুর থানা ওসি শাহ্ নুর এ আলম জানান, কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।